বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানের হেলমেট!
বর্তমানে ডিফেন্স টেকনোলজির আধুনিকায়নের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন কর্পোরেশনের তৈরি এফ-৩৫ (জেন-৩) স্টেলথ যুদ্ধবিমানের হেলমেটে। এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান লকহিড মার্টিন কর্পোরেশন ডিজাইন ও তৈরি করলেও এর পাইলটের ব্যবহৃত অত্যাধুনিক হেলমেটটি ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিং করে যৌথভাবে আমেরিকার ইলবিট সিস্টেম ও রকওয়েল কলিংস কোম্পানি।
পাইলটের ব্যবহৃত নতুন প্রজন্মের জেন-৩ হাই-টেক Helmet Mounted Display System (HMDS) এর পার ইউনিট কষ্ট কিনা ৪ লক্ষ ডলার বা প্রায় ৪.৫ কোটি টাকার সমান। এটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে পাইলট আকাশে উড্ডয়নরত অবস্থায় প্রয়োজনে বিমানের ককপিটে বসে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে সবকিছু অবজার্ভ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশনা হেলমেটের ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করে।
তাছাড়া এটিতে অতি উচ্চ প্রযুক্তির হেড আপ ডিসপ্লে, নাইট ভিশন ক্যাপাবিলিটি সেন্সর থাকায় দিনেরাতে ও যে কোন প্রতিকূল ২৪ ঘণ্টাই কার্যকরভাবে কমব্যাট মিশন পরিচালনা করার সুবিধা দেয়। তাছাড়া ভয়েস কমান্ড এন্ড কন্ট্রোলের মাধ্যমে খুব সহজে ও নির্ভুলভাবে যুদ্ধবিমান অপারেট করতে পারে। উচ্চ প্রযুক্তির এই হেলমেটের রিয়েল টাইম অ্যাসেস টু ফ্লাইট ডাটা, টার্গেটিং ইনফরমেশন, শিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস থ্রু অ্যাডভান্স ডিসপ্লে এবং সেন্সর ফিউশন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে।
যা কিনা এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেটের Helmet Mounted Display System (HMDS) হেলমেটকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও অতি উচ্চ প্রযুক্তির হেলমেটের খেতাব এনে দিয়েছে। আর এই উচ্চ প্রযুক্তির হেলমেট মাউন্টেড ডিসপ্লে ( এইচএমডি ) যুদ্ধবিমানের হেলমেটের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিমানকে না ঘুরিয়েই বিমানের পাইলট যে কোন দিকে তাকিয়ে সেই দিকের টার্গেটকে লক করে মিসাইল কিংবা অন্যান্য অস্ত্র ফায়ার করতে পারে ৷
হেলমেট-মাউন্টেড ডিসপ্লে ( এইচএমডি ) আসলে এমন একটি হেলমেট সিস্টেম , যা কিনা বিমানের পাইলটের চালকের চোখের কাছে কমব্যাট মিশন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে এবং এ থেকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে কিংবা কমান্ড করতে সহায়তা করে যা অতি আধুনিক মানের এই জাতীয় প্রযুক্তি সমৃদ্ধ হেলমেটে আবার ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে পাইলট খুব সহজে ও দ্রুত এয়ার মিশন পরিচালনা করতে পারেন।
নতুন প্রজন্মের এই হেলমেটটি পাইলটকে দিন বা রাতে যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রিয়েল টাইম ভিডিও/চিত্র প্রদান করে এবং নিখুঁতভাবে টার্গেটকে শনাক্ত করতে সহায়তা করে। তাছাড়া এর সুনির্দিষ্ট হেড-ট্র্যাকিং সক্ষমতা এবং লো-লেটেন্সি গ্রাফিক্স প্রসেসিংয়ের কারণে, পাইলটকে একটি ভার্চুয়াল হেড-আপ ডিসপ্লে (এইচইউডি) প্রদান করে। যা ফলে এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট হচ্ছে এমন একটি কৌশলগত উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, যা কিনা ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম (এইচইউডি) ছাড়াই নিখুঁতভাবে এয়ার কমব্যাট মিশন পরিচালনা করে।
তথ্যসূত্রঃ ইলবিট, কলিন্স অ্যারোস্পেস ও ইউকীপিডিয়া।