আকাশ যুদ্ধের রাজা হচ্ছে (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল!

আকাশ যুদ্ধে যুদ্ধবিমানের ব্যবহারের ধারণাটি ১৯১০ সালের দিকে শুরু হলেও একে একেবারে পাল্টে দেয় এয়ার টু এয়ার মিসাইলের আবিষ্কার। যার প্রথম সফল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় কিনা ১৯৫৮ সালের দিকে। মূলত দ্বিতীয় চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে চলা সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে প্রথম বারের মতো আকাশে এয়ার টু এয়ার মিসাইল ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে আকাশ যুদ্ধের ধারণায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন চলে আসে।

Nov 10, 2024 - 00:32
আকাশ যুদ্ধের রাজা হচ্ছে (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল!
আকাশ যুদ্ধের রাজা হচ্ছে (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল

আমেরিকার তৈরি শর্ট রেঞ্জের এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার এয়ার টু এয়ার মিসাইল প্রথম সার্ভিসে আসে ১৯৫৬ সালে। যার খবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন কিংবা চীন কেউই জানত না। আসলে ২.৫ ম্যাক গতির এই শর্ট রেঞ্জের এয়ার টু এয়ার মিসাইলটি হচ্ছে বর্তমানে সার্ভিসে থাকা সকল এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পূর্বসূরি। যা ব্যবহার করে তাইওয়ান মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চীনের প্রায় ৩০টি বা তার অধিক সংখ্যক যুদ্ধবিমান আকাশেই ধ্বংস করে দেয়।

তবে বর্তমানে সারা বিশ্বের মধ্যে বহুল পরীক্ষিত এবং কার্যকর এয়ার টু এয়ার মিসাইল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এআইএম-১২০ সিরিজের মিসাইল। আর আমেরিকার রেইথন কোম্পানির তৈরি এই সিরিজের মধ্যে সবচেয়ে অ্যাডভান্স এবং কার্যকর বিয়োণ্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ (বিভিআর) সক্ষমতার এআইএম-১২০ডি৩ সিরিজের অ্যাডভান্স মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম-ডি)।

এআইএম-১২০ডি৩ সিরিজের অ্যাডভান্স মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম-ডি) পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ব্যবহার করা হয় গত ২০২২ সালের ৩০শে জুন। এ সময় আমেরিকার বিমান বাহিনীর একটি লং রেঞ্জের এফ-১৫ স্টাইক ঈগল যুদ্ধবিমান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এর ১৬০ কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে থাকা একটি এরিয়াল টার্গেটকে সফলভাবে ধ্বংস করে দেয়।

আসলে ৪.০ ম্যাক গতির এআইএম-১২০ডি সিরিজের (এএমআরএএএম-ডি) মিসাইলের সর্বোচ্চ রেঞ্জ ১৬০ কিলোমিটার। যা কিনা ১৯৯৭ সাল থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪র্থ বৃহৎ মিলিটারি এণ্ড ডিফেন্স ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জায়ান্ট কর্পোরেশন রেইথন (Raytheon) ম্যানুফ্যাকচারিং করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির যুদ্ধবিমান যেমন এফ-২২, এফ-১৫, এফ-৩৫, এফ-১৬ এবং এফ-১৮ সুপার হরনেট যুদ্ধবিমানের মূল প্রাণ হচ্ছে এই মিসাইল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটল প্রুভ এই সিরিজের এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পার ইউনিট কষ্ট সম্পর্কে স্টহিক তথ্য পাওয়া না গেলেও মনে করা হওয়া এই জাতীয় উচ্চ প্রযুক্তির এআইএম-১২০ডি৩ সিরিজের অ্যাডভান্স (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পার ইউনিট কষ্ট হতে পারে আনুমানিক ৩ মিলিয়ন ডলার। তবে বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লং রেঞ্জের এআইএম-১২০সি-৭/৮ সিরিজের এয়ার টু এয়ার মিসাইল রপ্তানি করেছে আমেরিকা।

তবে বিশ্বের মধ্যে বিয়োণ্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ (বিভিআর) মিসাইল ডিজাইন ও ইঞ্জিনিয়ারিং এ আমেরিকা অনেকটাই এগিয়ে গেলেও বর্তমানে বিয়োণ্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল তৈরির প্রতিযোগিতায় ফ্রান্সের মেটওর, রাশিয়ার আর-৭৭ এবং চীনের পিএল-১৫ দুনিয়া কাঁপাতে শুরু করে দিয়েছে। আর এবার এই প্রতিযোগিতায় যুক্ত তুরস্কের গকডুগান এবং ইরানের সেডজিল এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইল। 

একাধিক ইন্টারনেট সূত্রের আলোকে জানা যায় যে, রাশিয়ার তৈরি আর-৭৭ এয়ার টু এয়ার মিসাইলের রেঞ্জ ১১০ কিলোমিটার, চীনের পিএল-১৫ এর রেঞ্জ ২০০+ কিলোমিটার এবং ফ্রান্সের তৈরি মেটওর অ্যাডভান্স এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইলের সর্বোচ্চ রেঞ্জ ২০০ কিলোমিটার। তাছাড়া তুরস্কের গকডুগান মিসাইলের রেঞ্জ ১০০ কিলোমিটার এবং ইরানের সেডজিল মিসাইলের আনুমানিক রেঞ্জ প্রায় ৯০ কিলোমিটার।

Sherazur Rahman

Sherazur Rahman (সিরাজুর রহমান) Assistant Teacher and Writer, Singra, Natore, Bangladesh.