অত্যাধুনিক এমকিউ-৯বি (স্কাই/সী গার্ডিয়ান) কমব্যাট ড্রোন ক্রয়ের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করেছে ভারত!

গতকাল ১৫ই অক্টোবর মঙ্গলবার ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তর আমেরিকার কাছ থেকে মোট ৩১টি অত্যাধুনিক এমকিউ-৯বি (স্কাই/সী গার্ডিয়ান) প্রিডিয়েটর-বি সিরিজের কমব্যাট ড্রোন ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। যার চুক্তিমূল্য ওয়েপন্স, লজিস্টিক সাপোর্ট এন্ড ট্রেনিং প্যাকেজসহ নির্ধারণ করা হয়েছে মোট ২৮ হাজার কোটি রুপি বা ৩.৩ বিলিয়ন ডলার। মূলত গত ২০১৮ সাল থেকে ভারত তার সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে এই কমব্যাট ড্রোন সংগ্রহের প্রাথমিক আলোচনা চালিয়ে যায়।

Oct 17, 2024 - 22:41
অত্যাধুনিক এমকিউ-৯বি (স্কাই/সী গার্ডিয়ান) কমব্যাট ড্রোন ক্রয়ের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করেছে ভারত!

আসলে গত ২০২৩ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তরের তরফে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগ ও এমকিউ-৯বি (স্কাই/সী গার্ডিয়ান) কমব্যাট ড্রোন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি জেনারেল এ্যাটোমিক্স অ্যারোনটিক্যাল সিস্টেমের কাছে ড্রোন ক্রয়ের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়ে (প্রস্তাব) লেটার অব রিকোয়েস্ট (এলওআর) পাঠানো হয়েছিল। যার আলোকে এবার চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করেছে দেশ দুটি।

নতুন চুক্তির আলোকে ভারতের নৌবাহিনীর জন্য হাইলি অ্যাডভান্স ১৫টি এমকিউ-৯বি (সী গার্ডিয়ান), বিমান বাহিনীর জন্য ৮টি এবং সেনাবাহিনীর জন্য ৮টি এমকিউ-৯বি (স্কাই গার্ডিয়ান) প্রেডিয়েটর-বি সিরিজের হেভি কমব্যাট ড্রোন ক্রয় করা হবে। যদিও অবশ্য ২টি এই সিরিজের (সী গার্ডিয়ান) কমব্যাট ড্রোন ভারতের নৌবাহিনীতে ইতোমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

চলতি ২০২৪ সালের অক্টোবরে চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্নের পর মার্কিন ড্রোন ম্যানুফ্যাকচারিং জায়ান্ট জেনারেল এ্যাটোমিক্স আগামী ২০২৬ সাল থেকে ভারতের কাছে পর্যায়ক্রমে ড্রোনের সরবরাহ শুরু করবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একাধিক থিংক ট্যাংকের দেয়া তথ্যমতে, প্রতিটি এই সিরিজের কমব্যাট ড্রোনের পার ইউনিট কষ্ট হতে পারে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বা তার কাছাকাছি।

এমকিউ-৯ (প্রেডিয়েটর-বি) সিরিজের ড্রোন সাগর ও স্থলে সরাসরি কমব্যাট অ্যাটাক মিশনের পাশাপাশি মাল্টি-মিশন ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেল্যান্স এন্ড রিকর্নিসেন্স মিশনে ব্যবহারের উপযোগী করে ডিজাইন ও তৈরি করেছে আমেরিকার জেনারেল এ্যাটোমিক্স অ্যারোনটিক্যাল সিস্টেম। বর্তমানে এটিকে বিশ্বের সেরা কমব্যাট ড্রোন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে চলতি বছরে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে খুব সম্ভবত মোট প্রায় ৫টি এই জাতীয় কমব্যাট ড্রোন ধ্বংস হয়েছে।

২ জন গ্রাউন্ড অপারেটর দ্বারা চালিত এই প্রেডিয়েটর-বি সিরিজের কমব্যাট ড্রোনকে বিশ্বের সেরা কমব্যাট ড্রোন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ফুয়েল ক্যাপাসিটি ১,৭৬৯ কেজি ও ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ১,৭৪৭ কেজি (ইন্টারনাল পে-লোড ৩৮৬ কেজি এবং এক্সর্টানাল পে-লোড ১,৩৬১ কেজি)। এটি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ফিট উচ্চতায় একটানা ২৭ ঘণ্টা উড্ডয়ন করতে সক্ষম। 

শক্তি উৎপাদনের জন্য এটিতে একটি ৯০০ হর্স পাওয়ারের হানিওয়েল টিপিই৩৩১-১০ টার্বোপ্রোপ ডিজেল ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এর ম্যাক্সিমাম স্পিড প্রতি ঘণ্টায় ৪৮২ কিলোমিটার। এর গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে ১১ কিলোমিটারের শর্ট রেঞ্জেরে এজিএম-১১৪ হেলফায়ার মিসাইল ইনস্টল করা হয়েছে। 

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, ভারত, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও জাপানের সামরিক বাহিনী বিভিন্ন সিরিজের এমকিউ-৯এ/বি কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) অপারেট করছে। তবে আমেরিকার বিমান বাহিনী গত ২০০৭ সাল থেকে প্রায় ১০৫টি বিভিন্ন সিরিজের এমকিউ-৯এ/বি সিরিজের (রিপার) কমব্যাট ড্রোন অপারেট করে।

তথ্যসূত্রঃ রয়েটার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এয়ারফোর্স টেকনোলজি।

সিরাজুর রহমান, (Sherazur Rahman), শিক্ষক ও লেখক, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ। sherazbd@gmail.com

Sherazur Rahman (সিরাজুর রহমান) Assistant Teacher and Writer, Singra, Natore, Bangladesh.