প্রতিদিন ডিম খেলে শরীরে যা ঘটে?
ডিমে পাওয়া পুষ্টি উপাদান স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিম নিঃসন্দেহে প্রোটিনের অন্যতম স্বাস্থ্যকর উৎস। ডিম সুস্বাদু এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর । কুসুম বিশেষ করে, ভিটামিন B12, ভিটামিন D এবং কোলিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উৎস, যা আমাদের শরীরকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এবার জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন ডিম খেলে শরীরে যা ঘটে :
পেশী তৈরি করে:
ফিটনেস সচেতনরা তাদের ডায়েটে ডিম রাখার কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো এতে থাকা ব্যতিক্রমী প্রোটিন সামগ্রী। স্বাস্থ্য প্রশিক্ষক টাইটাসের মতে, প্রতিটি ডিমে ৬-৭ গ্ৰাম উচ্চমানের প্রোটিন থাকে। এই প্রোটিন পেশী মেরামত, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। ডিমের প্রোটিন অত্যন্ত জৈব উপলভ্য, ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম উভয়ই পেশী তৈরিতে অবদান রাখে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে :
ডিম হলো উচ্চ মানের একটি ব্যাতিক্রমী উৎস, যা হজম হতে বেশি সময় নেয়, ফলে দীর্ঘ সময়ে জন্য পেট পূর্ণ রাখে। যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।
ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে :
সেলেনিয়াম ত্বকের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং ডিম এই পুষ্টির একটি চমৎকার উৎস। একটি বড় সেলেনিয়ামের আপনার দৈনিক প্রস্তাবিত মূল্যের ২৮ শতাংশ রয়েছে। আপনি যখন প্রতিদিন একটি ডিম খান , এটি আপনার ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং পাশাপাশি এটিকে সুস্থ রাখে। সেলেনিয়াম ত্বকের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং ডিম এই পুষ্টির একটি চমৎকার উৎস।
মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে :
ডিমে পাওয়া পুষ্টি উপাদান কোলিন সারাদিনের স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডিমের ঘন প্রোটিন উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় অবদান রাখে।
অতিরিক্ত ডিম খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে :
বেশি ডিম খেলে, বিশেষ করে ডিমের কুসুম খেলে রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে হাটের অসুখ হওয়া ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে হার্টের রোগীদের বা হাই কোলেস্টেরল আছে এরকম রোগীদের ডিমের কুসুম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এমনকি ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে এ সতর্কতা প্রযোজ্য।
অনেকে আবার ভাবেন, ডিমের সাদা অংশে যেহেতু খুব ভালো প্রোটিন অ্যালবুমিন আছে, তাহলে বেশি করে খাওয়া যাবে। মাংসপেশি বাড়ানোর জন্য অনেকে একদিন বেশ কয়টি ডিম খেয়ে ফেলেন। এমনিতে দৈনন্দিন ডিমের সাদা অংশ খাওয়া ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত অ্যালবুমিন গ্ৰহণে শরীরে বায়োনটি নামে এক ভিটামিনের শূন্যতা দেখা দেয়। ডিমে অনেকের অ্যালার্জি থাকে, সে ক্ষেত্রে এরকম কেউ বেশি ডিম খেলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে। বেশি করে ডিম খেলে পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।
ডিম অত্যন্ত উপকারী ও প্রয়োজনীয় খাবার। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ একটি করে ডিম খেতেই পারেন। তবে অতিরিক্ত খেলে শরীরে কারে ও কারো ও কিছু ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এ কারণে প্রতিদিন একটুর বেশি ডিম প্রয়োজন ছাড়া বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া না খাওয়াই ভালো।
অতিরিক্ত কোন কিছুই যেমন ভালো নয়, তেমনই একেবারে বাদ দেওয়া কোন মানে হয় না।