অন্ত্রের ক্যান্সার ঠেকাতে পারে রোগবাহী এই ব্যাকটেরিয়া
অন্ত্রের ক্যান্সার ঠেকানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে ‘সালমোনেলা’ নামের এক ব্যাকটেরিয়া। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়াটি রোগীর দেহের বিভিন্ন কোষে ক্যান্সারের আক্রমণ ঠেকিয়ে দিতে পারে।
সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংযোগ সাধারণত ফুড পয়জনিং ঘটানোর সঙ্গে পাওয়া যায়। এ ছাড়া এর একটি প্রজাতি টাইফয়েডও ঘটায়। পাশাপাশি এর ক্যান্সারও ঠেকানোর ক্ষমতার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলা হলেও থেরাপিতে এটি ব্যবহার করার পর দেখা গেছে, এটি অতটা কার্যকর নয়।
নতুন গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, সালমোনেলা ‘টি’ কোষের মাত্রা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা, যা শরীরকে সংক্রমণ ও রোগ থেকে সুরক্ষা দেয় ও ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে দিতে পারে।
ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষণা দলটি খুঁজে পেয়েছে, সালমোনেলা সাধারণত টি কোষে ‘অ্যাসপ্যারাজিন’ নামের অ্যামিনো অ্যাসিড কমিয়ে আনার মাধ্যমে ক্যান্সার কোষের আক্রমণ ঠেকিয়ে দেয়।
গবেষণাটির প্রথম লেখক ও ইউনিভার্সিটি অফ বার্মিংহাম-এর ইমিউনোলজি বিভাগের গবেষক ড. অ্যালিস্টার কোপল্যান্ড বলেছেন, তাদের এ গবেষণাটি ‘সালমোনেলার মতো রোগবাহী ব্যাক্টেরিয়াকে ক্যান্সার ঠেকানোর সহায়ক ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটাতে পারে।’
“টি কোষ, যা ক্যান্সার ঠেকানোর মূল চাবিকাঠি, তা এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় যথেষ্ট কার্যকর নয় কেন, তা দীর্ঘদিনের এক রহস্য,” বলেন তিনি।
“এখন, আমরা এর জন্য দায়ী প্রোটিন চিহ্নিত করেছি। পাশাপাশি, আমরা একটি জেনেটিক আচরণ লক্ষ্য করেছি, যা এই থেরাপির সম্ভাবনাকে পুরোপুরি তুলে ধরতে পারে।”
এ গবেষণায় অর্থায়ন করা ‘ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে’র ‘ডাইরেক্টর অফ রিসার্চ’ ড. ক্যাথেরিন এলিয়ট বলেছেন, গবেষণাটি ‘খুবই রোমাঞ্চকর’। এমনকি “ভবিষ্যতে মলদ্বারে ও অন্যান্য ক্যান্সারের রোগীর জন্য আরও কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরির সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।”
মুরগি, গরু, শূকর’সহ বেশ কিছু প্রাণীর অন্ত্রে সালমোনেলার উপস্থিতি থাকতে পারে। ব্যাকটেরিয়াটি ডিম, মুরগি ও শুকরের মাংসের মতো খাবারের পাশাপাশি গবাদি পশু ও সারের সংস্পর্শে থাকা ফল ও সবজি’তেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
সালমোনেলা সংক্রমণের লক্ষনগুলোর মধ্যে রয়েছে ডায়েরিয়া, পেটে ব্যাথা, বমি বমি ভাব, বমি ও জ্বর। আর এটি সাধারণত ১২ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দানা বাঁধে, যার স্থায়িত্ব হতে পারে চার থেকে সাত দিন পর্যন্ত।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘এমবো মলিকিউলার মেডিসিন’-এ।